আজকের প্রজন্ম কর্মব্যস্ততার কারণে দ্বীনের গভীর ইলম অর্জনে যেমন পিছিয়ে যাচ্ছে, তেমনি জেনারেল শিক্ষার সঙ্গে দ্বীনের শিক্ষা সমন্বয় করাও অনেকের জন্য কঠিন হয়ে উঠেছে। মারকাযুস সুফফাহ একাডেমি সেই শূন্যতা পূরণের লক্ষ্যেই প্রতিষ্ঠিত। এটি বিশেষভাবে জেনারেল শিক্ষিত ও কর্মজীবীদের জন্য সাজানো একটি অনন্য দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যেখানে দ্বীনের জ্ঞান অর্জনকে সহজ, কার্যকরী ও সময়োপযোগী করা হয়েছে।
আমাদের অনুপ্রেরণার উৎস সেই সোনালী যুগ, যখন রাসূলুল্লাহ ﷺ–এর সাহাবীগণ দুনিয়ার ব্যস্ততা ভুলে মসজিদে নববীর সুফফাহ–তে সমবেত হতেন। সেখানে তারা দ্বীনের জ্ঞান আহরণ করতেন, তা অন্তরে ধারণ করতেন, জীবনে বাস্তবায়ন করতেন এবং তাকওয়ার আলোয় নিজেদের জীবন আলোকিত করতেন।
এভাবেই সাহাবীগণ আলোর মশাল হাতে সমগ্র দুনিয়াকে আলোকিত করেছিলেন।
তাদের জীবনধারা আমাদের জন্য পথপ্রদর্শক, তাদের ত্যাগ ও অধ্যবসায় আমাদের জন্য উদ্দীপনা। আমরাও সেই মহিমান্বিত ধারার অনুসরণে আধুনিক ব্যবস্থাপনায় অনলাইন ও অফলাইনের সমন্বয়ে সাজিয়েছি একটি যুগোপযোগী শিক্ষা ব্যবস্থা। এখানে প্রতিটি শিক্ষার্থী উস্তাযদের সোহবতে থেকে নিজের অবস্থান অনুযায়ী ইলমের পথে ধাপে ধাপে অগ্রসর হওয়ার সুযোগ পায়। শুধুমাত্র নির্দিষ্ট কোর্সের মাঝে সীমাবদ্ধ না রেখে বিষয়ভিত্তিক দারস, মৌলিক আক্বিদা ও ফিকহী বিধানসমূহ, কুরআন ও সুন্নাহর বোধগম্য পাঠ এবং বাস্তব জীবনের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করা হয়। পাশাপাশি নিজস্ব প্রণীত ‘দৈনন্দিন মুহাসাবা তালিকা’—অর্থাৎ আমলের আত্মসমালোচনার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়। এর ফলে প্রতিটি তালিবে ইলম প্রতিদিনের চিন্তা, কথা, কাজ ও সময় ব্যবহারের হিসাব গ্রহণে অভ্যস্ত হয়ে যায়। এ আত্মসমালোচনা তার অন্তরকে পরিশুদ্ধ করে, অন্তরে প্রকৃত মুমিনের গুণাবলী প্রতিফলিত হয়। আর এভাবেই আগামী দিনের জন্য কল্যাণমুখী নিয়ত স্থির করা ও জীবন গঠনে সুস্পষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করা সহজ হয়ে যায়।
আমাদের শিক্ষার্থীরা শুধু একটি কোর্স শেষ করে থেমে যায় না; বরং তারা একটি নির্দিষ্ট রোডম্যাপ নিয়ে ইলমের ক্রমোন্নত স্তরে অগ্রসর হতে থাকে এবং নিজেকে প্রস্তুত করে। এছাড়াও সময়োপযোগী বিষয়াবলীর উপর নিয়মিত তালিম ও বিশেষ সেশন আয়োজনের মাধ্যমে আমরা ইলমের ধারাবাহিকতা রক্ষা করি এবং প্রতিটি শিক্ষার্থীর মাঝে দ্বীনের প্রতি অটল অঙ্গীকার গড়ে তুলি।
আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো এমন এক প্রজন্ম তৈরি করা, যারা কেবলমাত্র তথ্যভিত্তিক জ্ঞানেই সীমাবদ্ধ থাকবে না; বরং সাহাবায়ে কেরামের মতো দ্বীনের দাওয়াত মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেবে, সমাজকে আলোকিত করবে এবং বিশ্বময় ইসলামের আলো ছড়িয়ে দেবে।
© Copyright 2025 Markazus Suffah – All Rights Reserved. Developed By Marketitor